বৈশাখে ঐতিহ্যের খাবার ‘পাঁচন’ - লাল সবুজ

শিরোনাম

বিজ্ঞাপন দিন

Ads

বিজ্ঞাপন দিন

Ads

রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৯

বৈশাখে ঐতিহ্যের খাবার ‘পাঁচন’

বাঙালির প্রাণের স্পন্দন পহেলা বৈশাখ। বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি মানেই পহেলা বৈশাখ। এই উৎসব সর্বজনীন। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল বাঙালিই একসাথে পালন করে পহেলা বৈশাখ। চৈত্র সংক্রানিত্ম ও পহেলা বৈশাখের দিনে পাঁচন বা আডোরা খাওয়ার রীতিটা ছিল বহুদিনের প্রচলিত প্রথা। এর মধ্যে তিতা জাতীয় খাদ্য খাওয়ার রীতিও প্রচলিত রয়েছে। বিগত বছরের সমসত্ম জরা-ব্যাধি দূর হয়ে যাবে-এই বিশ্বাসে প্রচলিত-অপ্রচলিত সব ধরনের সবজির সমাহার ঘটে চৈত্র সংক্রানিত্ম ও পহেলা বৈশাখের দিনে দুপুরের খাবারে। বিশ্বাস এই যে, পহেলা বৈশাখের দিন ভালো খাবার খেলে সারাবছরের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
চৈত্র সংক্রানিত্মর আগে চলে ঘর-বাড়ি মোছা ও পরিষ্কারের কাজ। বিদায়ী বছরের সমসত্ম ধুলো-বালি-ময়লা-আবর্জনা দূর করে ঝকঝকে-তকতকে করে তোলা হয় ঘরবাড়ি। যাতে বৈশাখের আগমন ঘটে শুভ্র ও শুদ্ধতার মধ্য দিয়ে।
বৈশাখে ঐতিহ্যের খাবার হল ‘পাঁচন’। স’ানীয়ভাবে এর প্রচলিত নাম ‘আডোরা’। আঞ্চলিক ভাষায় ‘আডোরা’ শব্দটি এসেছে ‘আঠারো’ থেকে। এর অর্থ হচ্ছে আঠারো ধরনের সবজি দিয়ে এই খাবার তৈরি করা হয়। এগুলো হলো কাঁচা কাঠাল, কাঁচা কলা, করলা, কুমড়া, সজনা, ধানকুচি, পটল, তারা, কেত্ররঙ্গা, ঘাট ঘিলা, ডোঙ্গর, কলার মোচা, কাঁচা পেপে, আলিয়া, পুট্টি বেগুন ইত্যাদি।
পাঁচন শুধুমাত্র একটি খাবার নয়। এটি স্বাসে’্যর জন্য খুব উপকারী। এতে করে শরীরের বিভিন্ন রোগের উপশম হয়। চৈত্রের শেষদিন নিরামিষ খাওয়ার রেওয়াজ বাঙালির। এই পাঁচন এখন বৈশাখের ঐতিহ্যের খাবার। নগরীর কাঁচাবাজার, ফুটপাত থেকে শুরম্ন করে অভিজাত সুপারস্টোরেও বিক্রি হচ্ছে পাঁচনের প্রয়োজনীয় সবজি। তাই বাজারে এখন বৈশাখী খাবার সংশিস্নষ্ট সবজির পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিক্রেতারা এসব সবজি সংগ্রহ করে বাজারে এনেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। যা কিনতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।
নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, কর্ণফুলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।
চকবাজারে সবজি বিক্রেতা মো. সবুজ বলেন, প্রতিবছরের এই দিনকে সামনে রেখে ২-৩ দিন আগেই বিক্রি শুরম্ন করি। তবে এবার ১ দিন আগেই বিক্রি শুরম্ন করেছি। বেচা-বিক্রি মোটামুটি ভালোই।’
চকবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁঠাল ৫০ টাকা, ঢেড়স কেজি ৪০ টাকা, তিতকরলা কেজি ৬০ টাকা, বেগুন কেজি ৪০ টাকা, আলু ১৮ টাকা, তারা প্রতি পিস ১০, সজনা প্রতি কেজি ৮০টাকা, কাঁচা আম প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, কলার থোর ৪০ টাকা, আলিয়া প্রতি পিস ১০ টাকা, শাকের আঁটি ২০-৩০ টাকা ও প্রতি জোড়া কাঁচা কলা ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চকবাজার কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা গৃহিনী প্রমিলা দাশ বলেন, বৈশাখ উপলড়্গে বছরে একবার আঠারো রকমের তরি-তরকারি দিয়ে পাঁচন রান্না করা হয়। এটি খেতে খুব সুস্বাদু। তাই বিভিন্ন রকম সবজি সংগ্রহের জন্য বাজারে আসা। দেরি হলে অনেক কিছুই পাওয়া যায় না।’
কর্ণফুলী বাজারে বৈশাখের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, বৈশাখ উপলড়্গে বাজারে গ্রীষ্ম মৌসুমের সবজি বের হয়েছে। তবে মৌসুমি হওয়ায় এগুলোর দাম কিছুটা বেশি।’
সবজি কিনতে আসা হৃদয় চৌধুরী বলেন, ‘বাজারে সবরকম সবজির দাম বেশি। ৫০-৬০ টাকার নিচে সবজি নেই। তবে বাজারের চেয়ে ভাসমান সবজি বিক্রেতাদের কাছে দাম একটু সসত্মা পাওয়া যায়। তবুও সাধ্য অনুযায়ী কিনছি।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বিজ্ঞাপন দিন

Ads