ব্রাজিলের নিহত ১০ ফুটবলারের নাম প্রকাশ - লাল সবুজ

বিজ্ঞাপন দিন

Ads

বিজ্ঞাপন দিন

রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

ব্রাজিলের নিহত ১০ ফুটবলারের নাম প্রকাশ

Ads
ব্রাজিলের সীমানা পেরিয়ে বিশ্ব ফুটবল অঙ্গনকেই ঢেকে দিয়েছে শোকের ছায়ায়। আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে ১০ তরতাজা কিশোর ফুটবলারের প্রাণ। ঘুমের ঘোরেই নিভে গেছে বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন।
এমন ট্র্যাজেডির কথা শুনে কারও পক্ষেই কি স্থির থাকা সম্ভব! মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোরে।
ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ফ্লামেঙ্গোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ১০ কিশোর ফুটবলার। আহত হয়েছেন আরও তিনজন, যাদের একজনের অবস্থা গুরুতর।
প্রথমে শোনা গিয়েছিল নিহতদের মধ্যে ৪ জন একাডেমির খেলোয়াড়। ২ জন ক্লাবে ট্রায়াল দিতে এসেছেন। বাকি ৪ জন ক্লাবের কর্মকর্তা। পরে নিশ্চিত হওয়া গেছে নিহতদের সবারই বয়স ১৪ থেকে ১৬-এর মধ্যে। মানে সবাই কিশোর ফুটবলার।
বাবা-মা, ঘর-বাড়ি ছেড়ে যারা বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে ফ্লামেঙ্গো যুব একাডেমিকেই ঘর-বাড়ি বানিয়েছিলেন।

স্বপ্ন বুকে নিয়ে অন্য আর দশ দিনের মতো শুক্রবারও তারা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছিলেন। সেই ঘুমন্ত অবস্থাতেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছেন তারা।
প্রথমে নিহতদের পরিচয় ঠিকঠাক জানা না গেলেও পরে রিও ডি জেনিরোর পুলিশ ও ফ্লামেঙ্গোর কর্তারা মিলে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। প্রকাশ করেছেন নিহত ১০ কিশোর ফুটবলারের নামও।
ঘটনার পর থেকেই পুরো ব্রাজিলে চলছে শোকের মাতম। ফ্লামেঙ্গোর ক্লাব চত্বরতো মৃত্যুপুরিতেই পরিণত। মারা যাওয়া একেক কিশোরের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজনরা আসছেন, আর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে কান্নার রোল। যে কান্নার আওয়াজে প্রকম্পিত হচ্ছে রিও ডি জেনিরোর আকাশ-বাতাস।
এই মাতম ফ্লামেঙ্গোতে আরও অনেক দিনই চলবে। তারপর হয়তো এক সময় থেমেও যাবে। কিন্তু, বাবা-মা, ভাই-বোনের স্বপ্নের ঝাণ্ডা বুকে নিয়ে যারা ফুটবলার হতে এসেছিলেন এবং অকালেই ঝরে গেলেন, তাদের পরিবারের কান্নার রোল থামবে না সারা জীবনেও।
ব্রাজিলের এই জনপ্রিয় ক্লাবটি থেকে যুগে যুগে অনেক কিংবদন্তি ফুটবলারই উঠে এসেছেন। জিকো, রোমারিও, রোনালদিনহোদের মতো বিশ্ব মাতানো কিংবদন্তিরা এই ফ্লামেঙ্গোরই যুব একাডেমির পণ্য। কে জানে, আগুনের লেলিহান শিখা অকালেই যে ১০ জনের প্রাণ কেড়ে নিল, বেঁচে থাকলে হয়তো তাদেরও কেউ হতে পারতেন ভবিষ্যতের জিকো, রোমারিও কিংবা রোনালদিনহো।
এই কিংবদন্তিদের কথা বাদ দিন। রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ তুর্কি ভিনিসিয়াস জুনিয়রও এই ফ্লামেঙ্গোরই উৎপাদন। এই ক্লাবটি থেকেই তিনি গত গ্রীষ্মে যোগ দিয়েছেন রিয়ালে। ১৮ বছর বয়সী তরুণ নিজের সাবেক ক্লাবের মর্মান্তিক এই ঘটনাটা বিশ্বাস্যই করতে পারছেন না।

টুইটারে ভিনিসিয়াস এক প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘সে জায়গায় থাকার কথা মনে করলেই গা শিউরে উঠছে। আমি বিশ্বাস্যই করতে পারছি না।’
ভিনিসিয়াস জুনিয়রের মনটা বিশেষ বিষিয়ে তুলবে অন্য একটা তথ্যও। নিহতদের মধ্যে একজনের নামও ভিনিসিয়াস। তবে তার নামের আগে আর্থার আছে। মানে আর্থার ভিনিসিয়াস। ফ্লামেঙ্গো পরে নিশ্চিত করেছে নিহতদের সবাই ছিলেন প্রতিভাবান। ১৫ বছর বয়সী ক্রিস্তিয়ান এসমেরিও তো এরই মধ্যে ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-১৭ দলেও ডাক পেয়েছিলেন।
ইউরোপের নামিদামি ক্লাবগুলোও নাকি এরই মধ্যে তার উপর নজর দিয়েছিল। কিন্তু, ব্রাজিলের বিখ্যাত হলুদ জার্সি গায়ে চাপানো, ইউরোপে পাড়ি জমানো-আগুন সব স্বপ্নেরই ওপাড়ে পাঠিয়ে দিল ক্রিস্তিয়ান এসমেরিও’কে!
নিহত বাকি ৮ জনের নাম-থিলা পাইক্সো, বার্নার্দো পিসেতা, ভিক্টর ইসাইয়াস, গেডসন সান্তোস, রিকেলমে ভিয়েনা, পাবলো হেনস্রিক, জর্জে এদুয়ার্দো ও স্যামুয়েল থমাস। একেকটি নাম যেন হয়ে গেল ব্রাজিলিয়ানদের চির আক্ষেপের শিখা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বিজ্ঞাপন দিন